Hiuen Tsang | হিউয়েন সাং কোন দেশের পরিব্রাজক : হিউয়েন সাং কে ছিলেন এবং হিউয়েন সাং বাংলায় আসেন কার আমলে কত সালে? বিস্ততারিত জানুন আজকে ৷
প্রশ্নঃ হিউয়েন সাং কোন দেশের পরিব্রাজক? [MCQ]
(ক) | কোরিয়া |
(খ) | জাপান |
(গ) | রাশিয়া |
(ঘ) | চীন |

হিউয়েন সাং–
প্রাচীন কাল থেকে অদ্যাবধি ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলায় যে সব ভ্রমণকারী এসেছেন তার মধ্যে চৈনিক ভ্রমণকরী হিউয়েন সাঙ অন্যতম। সম্ভবত ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের কোন এক সময়ে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করেন।
হিউয়েন সাঙ ছিলেন চীন দেশীয় এক সম্ভ্রান্ত বনেদী পরিবারের সন্তান। সন্তানের অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা লক্ষ্য করে তাঁর পিতা খুব অল্প বয়সেই তারই এক বড়ো ভাইয়ের হেফাজতে একটা মঠে প্রেরণ করেন। সেই মঠেই তিনি আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষা গ্রহণ করতেন। পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে হিউয়েন সাঙ তাঁর আশপাশের মঠগুলোর জীবন যাত্রা ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ করতেন। পরবর্তীতে এই মঠের জীবন যাত্রার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ জাগরিত হয় এবং তিনি শ্রমণ হবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
কুড়ি বৎসর বয়সে শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি শ্রমণ হলেন। ততোদিন তিনি একটি বিষয় জানতে পেরেছেন তা হলো তাঁর দেশের মানুষের বৌদ্ধ ধর্ম বিচার জ্ঞান খুবই সীমিত। আর তিনি নিজেও বৌদ্ধ ধর্মের বহু নিয়ম কানুন অবগত নন। তিনি ভাবলেন কোনভাবে যদি ভারত বর্ষে পৌঁছানো যায় তাহলে বৌদ্ধ ধর্মের মূল গ্রন্থগুলোর কাছাকাছি আসতে পারবেন এবং তাঁর নিজের মনের দুয়ারও খুলে যাবে, সংশয়ও দূর হবে।
বয়স তখন তাঁর সবে উনত্রিশ, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন ভারত বর্ষ ভ্রমণের। তাঁর ইচ্ছা ভারতে গিয়ে বৌদ্ধদের বড়ো তীর্থস্থানগুলো দেখবেন এবং বড়ো সাধু সন্তদের কাছ থেকে ধর্ম বিষয়ে দীক্ষা গ্রহণ করবেন।
চীনদেশের সম্রাট কিন্তু তাকে ভারতবর্ষে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করলেন না। অতএব বাধ্য হয়েই ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দের কোন এক সময়ে তিনি গোপনে দেশ
ত্যাগ করলেন। সেকালে যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল খুবই খারাপ। চীন থেকে ১৫০০০ মাইল দীর্ঘ পথ কতো পাহাড় পর্বত আর মরুভূমি বিপদসংকুল অরণ্য এসব অতিক্রম করা সহজসাধ্য কর্ম ছিল না সেকালে ।
হিউয়েন সাঙ সম্ভবত খাইবার গিরিপথের ভেতর দিয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছিলেন। সিন্ধু নদ পার হয়ে কাশ্মীর, সেখান থেকে মথুরা, কনৌজ, গঙ্গানদী পাড়ি, প্রয়াগ, বারানসী, এলাহাবাদ, শ্রাবন্তী, বৈশালা, কপিলাবস্তু, সারনাথ, গয়া, পাটলিপুত্র, উজ্জ্বয়িনী, কুশানগর, রাজগৃহ মোট কথা বুদ্ধের জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্থানই পর্যটন করেছেন।
আমাদের বাংলাদেশের বগুড়ার মহাস্থান গড় পূর্বনাম পূণ্ড্রবর্ধন এবং বর্তমান কুমিল্লার অন্তর্গত ময়নামতি, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পর্যন্ত দর্শন করেছিলেন তিনি। এছাড়া, চম্পা, কর্ণ সুবর্ণ, কলিঙ্গ এসব স্থানও পর্যটন করেছিলেন। ভারত বর্ষ থেকে নানা বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ৬৪৪ সালের কোন এক সময়ে তিনি নিজ দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
দেরার পাশে হিউয়েন সাঙ বেশ কিছু স্বর্ণ, রৌপ্য ও চন্দন কাঠ নির্মিত বুদ্ধের মূর্তি নিয়ে যান। আরো সাথে বহু সংখ্যক বস্তা বোঝাই করে বৌদ্ধ ধর্মের দুর্লভ প্রাচীন পুঁথির ভাণ্ডার ।
-
চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং কত সালে বাংলায় আসেন?
উত্তরঃ ৬৩৪ সালে ৷
-
হিউয়েন সাং বাংলায় আসেন কার আমলে?
উত্তরঃ হর্ষবর্ধন ৷
-
হিউয়েন সাং এর দীক্ষাগুরু কে ছিলেন?
উত্তরঃ শিলভদ্র ৷